ইসলামী খেলাফত কায়েম না হলে অপরাধ দমন করা যাবে না

সুলতান নবাব আল বাঙালি | 12 Jul 2025, 08:25 PM
বাংলাদেশে ইসলামী খেলাফত কায়েম না হলে অপরাধ দমন করা যাবে না। ইসলামে অপরাধের শাস্তির আরো অনেক বিধান রয়েছে। আমি শুধু এখানে হত্যার বিধানের কথা উল্লেখ করতেছি। ইসলামী নিয়ম হলো কমপক্ষে চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য অনুযায়ী জনসম্মুখে অপরাধীকে দ্রুত শাস্তি প্রদান করে বিচার নিষ্পত্তি করা। আর কাউকে হত্যার শাস্তি হলো কেসাস। অর্থাৎ অপরাধী কাউকে যেভাবে হত্যা করবে, অপরাধীর শাস্তি হলো তাকেও ঠিক সেভাবে হত্যা করে শাস্তি নিশ্চিত করা। তবে যদি মৃতের পরিবার হত্যাকারীদের ছাড় দেয় তাহলে সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু আমরা অপরাধীদের শাস্তি প্রকাশ্যে দেখতে পাচ্ছি না। গোপনে শাস্তি হলে এটা মনে ভয়ের সঞ্চার করে না। যার কারণে দিনে দিনে অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশে ছাত্রজনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ এ তাগুত আওয়ামী লীগের পতন হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় বসে। কিন্তু ইদানিং বিএনপির মধ্যেও তাগুতী অভ্যাস চলে এসেছে।

পুরান ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে যেভাবে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ ভাইজানকে বিএনপির দলেরা চাঁদা না দেয়ায় পৈশাচিক নৃশংসভাবে পাথর দিয়ে থেতলিয়ে মেরে ফেলা হলো, এবং তার মৃত্যুর পর যেভাবে বুকের উপর উঠে নাচা হলো তা সোহাগ ভাইয়ের পরিবার আজীবন মনে রাখবে। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার সময় চারপাশে মানুষের ভিড় ছিল। তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হত্যার দৃশ্য উপভোগ করছিল। বাঁধা দেয়ার সাহস তাদের ভেতরে ছিল না। তাদের মতো ভীতু কাপুরুরুষদের কারণেই অপরাধীরা বিনা বাঁধায় তাদের অপরাধ ঘটাতে পারে। আর বিচারের ব্যাপারে আসলে আমি মনে করি এই যে হত্যাকাণ্ড ঘটে গেলো তা হয়েছে একমাত্র এই বাংলার বিচারব্যবস্থার কারণে।
একটি অপরাধের বিচার নিষ্পত্তি করতে রাষ্ট্রের বছর থেকে যুগ পেরিয়ে যায় অথচ বিচার নিষ্পত্তি হয় না। যার ফলশ্রুতিতে অপরাধীরা হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সাহস পেয়ে বসে। সোহাগ ভাইজানের পরিবারের বিষয়ে যা জানতে পেরেছি, তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে, তার স্ত্রী নেই। এখন আপনারা বলুন, পুরো দিক থেকে এতিম দুটি শিশুর ভরণ পোষণ কে নিবে? কে তাদের দেখভাল করবে? এর দায় অবশ্যই রাষ্ট্রকে নিতে হবে। রাষ্ট্রকে অবশ্যই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের দ্রুত মৃত্যুদণ্ড দিয়ে অপরাধের বিচার নিষ্পত্তি করতে হবে।
আপনি যদি নামধারী মুসলিম না হয়ে নিজেকে সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিতে চান তাহলে আপনাকে ইসলামী খেলাফত মানতেই হবে। গণতন্ত্রে কোনো শান্তি পাবেন না, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে মারামারি, হত্যাকাণ্ড চলতেই থাকবে। গণতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচন প্রয়োজন। কিন্তু ইসলামী খিলাফতের নিয়ম হলো আমীর যদি এক আল্লাহর রাস্তায় এবং সুন্নতী মোতাবেক রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, তাহলে সে আজীবন ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

হ্যাঁ আমি মানছি, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একেবারে ইসলামী খেলাফত কায়েম সম্ভব না। ধীরে ধীরে ইসলামী খেলাফতের পথে হাঁটতে হবে। তবে আমাদের পক্ষ রাখতে হবে ইসলামী খেলাফতের দিকে। আর বাংলায় আমরা যারা ইসলামী আন্দোলন করে থাকি তাঁদের উচিৎ ইসলামী খেলাফতের জন্য রাজনীতি করা। গণতান্ত্রিক কায়দায় হয়তো ক্ষমতায় আসা যাবে, কিন্তু গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আপন করে নেয়া যাবে না। ধীরে ধীরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ছুঁড়ে ফেলে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

তবে এই আধুনিক দুনিয়ায় সবচেয়ে শক্তিশালী যে মাধ্যম কাজ করে তা হলো মিডিয়া। এই মিডিয়া আপনাকে হয়রানী করতে পারে, আপনাকে সম্মানে ভূষিত করতে পারে, এই মিডিয়া আপনাকে সকলের সামনে নিয়ে আসতে পারে।
অতএব মুসলিমদের উচিৎ মিডিয়াকে নিজের অধীনে নিয়ে আসা, মিডিয়ার মাধ্যমে সত্যকে প্রচার করা। তো চলুন আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের ইসলামী খেলাফতের জাগরণী শুরু করি। একদিন আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই বাংলায় ভবিষ্যতে ইসলামী খেলাফত কায়েম হবেই ইনশাআল্লাহ্।

সালতানাতে বাংলা হলো এমনই এক মিডিয়া, যা ইসলামী খিলাফতের স্বপ্ন নিয়ে সাজানো হয়েছে।
জয়েন করুন সালতানাতে বাংলার একজন নাগরিক হিসেবে: https://www.saltanatebanglah.com/register
📎 সংযুক্তি:
রেটিং: ⭐ 0.0/5

কোনো মন্তব্য নেই।